আকতার হোসেন রবিন :
কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে গত ফেব্রুয়ারী মাসে সৌদি আরবে ওমরাহ হজ্ব পালন করতে গিয়ে ফ্লাইটটি বাতিল হওয়ায় কুমিল্লার দেবিদ্বারের ২২জন ওমরাহ হজ্বযাত্রী জেদ্দাসহ বিভিন্ন যায়গায় আটকে থাকায় হজ্ব কোম্পানি ২২জনকে ৪টি রুমে থাকার জন্য হোটেল ব্যাবস্থা করলেও খাবারের কোন ব্যাবস্থা না থাকা অর্থের সংকটে তাদের অনেকটা কষ্টের মাঝেই মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। এমতাবস্থায় তারা জরুরী ভিত্তিতে মানবিক দিক বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। যাতে অতিদ্রুত তাদের নিজ গন্তব্যে পৌছানোর ব্যাবস্থা করা হয়।
জানা যায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ইং সৈৗদি এয়ারলাইন্সএর ৮০২ ফ্লাইটে ওমরাহ হজ্ব পালন করতে যায়। এবং তাদের গত ১৪মার্চ সৌদি এয়ারলাইন্স ৮০২ বাংলাদেশে ফিরতি ফ্লাইট ছিল। কিন্তু শরীকা মক্কা থেকে ১০মার্চ তাদের জানানো হয় ফ্লাইটটি ১৪ মার্চের এর পরিবর্তে ১৫মার্চ সৌদি সময় বিকাল ৩.৩০ মিনিট ফ্লাইট হওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় বিমান কর্তৃপক্ষ। সেই অনুযায়ী ১৫মার্চ সকাল ১০টায় জেদ্দা এয়ারপোর্টে উপস্থিত হলে তাদের দুপুর ১২টায় মাল বুকিং দিতে বললে তারা মাল বুকিং দিতে ভিতরে প্রবেশ করলে জানানো হয় ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছে। তাৎক্ষনিক যাত্রিরা ওজারাতুল হজ্বকে বিষয়টা জানালে তারা ১৭মার্চ সৌদি সময় রাত ৩.৩০ মিনিটে ৮০৮ সৌদিএয়ারলাইনসের একটি টিকিট ইস্যু করে তাদেরকে একটি হোটেলে পাঠানো হয়। পরে ১৬মার্চ ২০২০ইং বিকালে ওজারাতুল হজ্ব এর পক্ষ থেকে আবার জানানো হয় রাতের সকল ফ্লাইট বাতিল করেছে। এর পর থেকে আর কোন ফ্লাইট না থাকায় তারা বিভিন্ন স্থানে আটকে যায়। ওজারাতুল হজ্ব কোম্পানি থাকার জন্য হোটেল ব্যাবস্থা করলেও তাদের অনেকটা কষ্টের মাঝেই সেখানে থাকতে হচ্ছে।
এ নিয়ে মুঠো ফোনে বাংলাদেশি মোয়ালিম্ম মাওলানা মাইনুদ্দীন সরকার জানান, জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ এম্বাসীর কাউন্সিলর মাকসুদ সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি হজ্ব বিষয়ক কর্মকর্তা হাসান সাহেবের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সকল তথ্যাদি নেন এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
ওমরাহ হজ্বযাত্রী কাঠ ব্যাবসায়ী বাবুল মিয়া জানান, তার ৩ বছরের শিশু সন্তান রেখে স্বামী -স্ত্রী ওমরাহ করতে আসেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় এবং বৈশ্বিক করোনার প্রকোপে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে দিন কাটাচ্ছেন।
৮০ বছরের বৃদ্ধ ওমরাহ হজ্ব যাত্রী জারু মিয়া জানান, আমি জমি বিক্রি করে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা নিয়ে এসেছি। ফেরার পথে ফ্লাইটটি বাতিল হওয়ায় খাবারসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। সাথে কোন টাকা পয়সা না থাকায় অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে, আমি শারিরীক ভাবে অসুস্থ। থাকা,খাওয়া ও চিকিৎসার অভাবে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
হজ্ব যাত্রী আয়ফলেরন্নেসা জানান, তিনি হাইপ্রেশারের রোগী। সাথে কোন টাকা পয়সাও নেই। ফ্লাইট নিয়ে অনিশ্চয়তার কারনে প্রায় সময় প্রেসার বেড়ে যায়। অন্যান্য দেশের সরকার তাদের ওমরাহ হজ্বযাত্রীদের নিজ দেশে নিয়ে গেলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ না থাকায় তাদের পড়তে হয়েছে নানা বিপাকে।